আপনার জন্য আরো লেখা
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস সুদূর প্রসারী বহু ঘাত-প্রতিঘাত ও চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজকের বাংলাদেশ।বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ব্যবস্থা সংসদীয় পদ্ধতির। বাংলাদেশের সংবিধান ১৯৭২ সালে প্রণীত হয়, এবং এখন পর্যন্ত এতে ১৬ টি সংশোধনী যোগ করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে সরকারের প্রধান ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে। বহুদলীয় গণতন্ত্র পদ্ধতিতে এখানে জনগণের সরাসরি ভোটে জাতীয় সংসদের সদস্যরা নির্বাচিত হন। নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত। আইন প্রণয়ন করা হয় জাতীয় সংসদে।
১৯৭১ সালঃ
বাংলাদেশের রাজনীতি ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই দেশটির জন্মের ইতিহাস, বিদ্যমান সরকার ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক প্রভাব এবং মানুষের রাজনীতিমনস্কতা কেন্দ্র করে আবর্তিত। ১৯৭১ এ অস্থায়ী সরকার গঠন এবং অস্থায়ী সংবিধান প্রণয়নের পর থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা কমপক্ষে পাঁচবার পরিবর্তিত হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান প্রণীত ও বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়। জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করেন। সেদিনই বঙ্গবন্ধু ঢাকার উদ্দেশ্যে লন্ডন যাত্রা করেন। লন্ডনে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথের সাথে তাঁর সাক্ষাত হয়। লন্ডন থেকে ঢাকা আসার পথে বঙ্গবন্ধু দিল্লীতে যাত্রা বিরতি করেন। বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারী ঢাকায় পৌঁছেন। ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান প্রণীত হয়। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রথম সাধারণ নির্বচনের তারিখ (৭ মার্চ ১৯৭৩) ঘোষণা করেন। ১৫ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদানের কথা ঘোষণা করেন।
১৯৭৩ সালঃ
জাতীয় সংসদের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৩ সালে। জাতীয় সংসদের প্রথম নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৯৩ আসন লাভ। ৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সিপিবি ও ন্যাপের সমন্বয়ে ঐক্যফ্রন্ট গঠিত। ৬ সেপ্টেম্বর জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য বঙ্গবন্ধু আলজেরিয়া যান। ১৭ অক্টোবর তিনি জাপান সফর করেন।
১৯৭৪ সালঃ
১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করে। বঙ্গবন্ধু সরকার ঢাকা পৌরসভাকে কর্পোরেশনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। ২২ ফেব্র“য়ারি বাংলাদেশকে পাকিস্তানের স্বীকৃতি প্রদান। ২৩ ফেব্রুয়ারি ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সর্বসম্মত অনুমোদনে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করে এবং ২৫ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন।
১৯৭৫ সালঃ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ। ২৪ ফেব্র“য়ারি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় দল ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ’ গঠন। বঙ্গবন্ধু ২৫ ফেব্রুয়ারি এই জাতীয় দলে যোগদানের জন্য দেশের সকল রাজনৈতিক দল ও নেতাদের প্রতি আহবান জানান। ১৫ আগষ্টের ভোরে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিজ বাসভবনে সেনাবাহিনীর কতিপয় উচ্চাভিলাষী অফিসার বিশ্বাসঘাতকের হাতে নিহত হন। জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যা ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগের চারজন সিনিয়র নেতা - সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে ঢাকার কারাগারে হত্যা করা হয়। হত্যাকারী সেনা কর্মকর্তারা ভেবেছিল যদি সে চারজন রাজনীতিবিদকে যদি হত্যা করা হয় তাহলে পাল্টা অভ্যুত্থান হলেও সেটি রাজনৈতিক সমর্থন পাবেনা। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা গ্রহণ ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সিপাহি জনতা বিপ্লবের পর তিনি রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন।