আপনার জন্য আরো লেখা
১ম প্রজন্মঃ (১৯৪২-১৯৫৫)
মার্ক-১ কম্পিউটার
ইলেকট্রো মেকানিক্যাল ডিভাইস । এটি তে ৩০০০ এরও বেশি সক্রিয় সুইচ ব্যবহার করা হয়েছে। উচ্চতায় এটি ৮ ফুট এবং ৫০ ফুট দীর্ঘ । মার্ক-১ কম্পিউটার দিয়ে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ এবং ২৩ ঘর দশমিক পর্যন্ত নাম্বার নিয়ে কাজ করতে পারে। দুইটি নাম্বার যোগ করতে ০.৩ সেকেন্ড এবং গুণ করতে ৪.৫ সেকেন্ড সময় নেয়।
The Atanasoff Berry Computer ( সংক্ষেপে ABC নামে পরিচিত )
The Atanasoff Berry Computer ( সংক্ষেপে ABC নামে পরিচিত )
অভ্যন্তরীণ যুক্তিগত কাজগুলোর জন্য এটিতে ভেকিউম টিউব ব্যবহার করা হয়েছে। স্টোরেইজ এর জন্য ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হয়েছে।
The Electronic Numerical Integrator And calculator (ENIAC)
The Electronic Numerical Integrator And calculator (ENIAC)
এটিই প্রথম ইলেক্ট্রনিক কম্পিটার। প্রায় ১৮০০০ ভেকিউম টিউব ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে ৮০০ স্কয়ার ফুট জায়গা প্রয়োজন হত। এটি তে দুইটি নাম্বার যোগ করতে ২০০ মাইক্রো-সেকেন্ড এবং গুণ করতে ২০০০ মাইক্রো-সেকেন্ড সময় লাগে। এবং সেই সাথে বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কিত সমস্যাও সমাধান করা হত।
The Electronic Discrete Variable Automatic Computer (EDVAC)
নির্দেশনা এবং ডাটা সংরক্ষন ধারনা প্রথম আসে এটি তৈরীর মাধ্যমে। EDVAC এ দশমিক সংখ্যার পরিবর্তে মানুষের বোধগম্য হয় এইরকম ফরম্যাটে ও বাইনারি তে ডাটা ও নির্দেশনা সংরক্ষন করা হত। ডাটা সংরক্ষন করতে মাঝে মাঝে পাঞ্চ কার্ডও ব্যবহার করা হতো।
The Universal Automatic Computer One (UNIVAC-1)
বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল কম্পিউটার হিসেবে ধরা হয় UNIVAC-1 কে-ই। এটি প্রথম স্থাপন করা হয় সেন্সাস ব্যুরো তে। ১৯৫৪ সালে প্রথম এটি বানিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করে জেনারেল ইলেক্ট্রিক কর্পোরেশন।
IBM 701, 650 (International Business Machines Corporation)
IBM 701, 650 (International Business Machines Corporation)
প্রথম বানিজ্যিক ভাবে বাজারজাত করা হয় এটি।বিভিন্ন ব্যবসা-বানিজ্যের কাজে এবং বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন কাজে এটি ব্যবহার করা হতো।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্টঃ
প্রথম প্রজন্মের উদ্ভাবিত ভেকিউম টিউব
ফটোঃ ইন্টারনেট
|
- ঐ সময় সবচেয়ে দ্রুত হিসাব করার মাধ্যম ছিল।
- বৃহদায়কার ছিল বলে স্থাপন করতে প্রচুর জায়গা প্রয়োজন হতো।
- ১৮০০০ ভেকিউম টিউব ব্যবহার করতে হয়েছিল বিধায় ঘর প্রচন্ড গরম হয়ে যেত, তাই রুম সার্বক্ষণিক ঠান্ডা রাখতে হতো। হাজার হাজার ভেকিউম টিউব এর জন্য অনেক বৈদ্যুতিক শক্তির প্রয়োজন হতো।
- ভেকিউম টিউবে ফিলামেন্ট ব্যবহার করা হতো বলে ক্ষণে ক্ষণে হার্ডওয়্যার বিকল হয়ে যেত।
- খুব বেশি ্বেশি বিকল হতো বলে নিয়মিত রক্ষাণাবেক্ষন করার প্রয়োজন হয়ে পরতো।
- হাজার হাজার অংশবিশেষ হস্তসাধিত এসেম্বল করে তৈরি করা হতো, তাই বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হতো না।
[next]
দ্বিতীয় প্রজন্মঃ (১৯৫৫-১৯৬৪)
- দ্বিতীয় প্রজন্মে ব্যবহার করা হয়েছে ট্রানজিস্টর ( ১৯৪৮ )। যা ভেকিউম টিউব থেকে ১০ গুণ বেশি গতি সম্পূর্ণ।
দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্ভাবিত ট্রানজিস্টর
ফটোঃ ইন্টারনেট - টিউব এর তুলনায় বেশি নির্ভরযোগ্য কারন এইখানে ফিলামেন্ট এর মতো কোন যন্ত্রাংশ ছিলো না যেটা আগুন ধরে যেতে পারে।
- হার্ডওয়্যার বিকল হওয়ার প্রবণতা কম ছিল।
- ট্রাসজিস্টর ব্যবহারে ফলে টিউব-এর ১০ ভাগের এক ভাগ বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহার করার প্রয়োজন হতো।
- কম খরচেই বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করা যেতো।
- টিউব এর তুলনায় অনেক ছোট ছিল।
- প্রথম প্রজন্মের টিউবের তুলনায় গরম অনেক কমে গিয়েছিল।
- দ্রুত গতির মেইন মেমোরি এবং সহায়ক মেমোরির অভিজ্ঞতা হয়েছে এই দ্বিতীয় প্রজন্মেই।
- হাই-লেভেল ল্যংগুয়েজ থাকার কারনে দ্বিতীয় প্রজন্মে কম্পিউটার ব্যবহার আরো সহজতর হয়ে পরেছিল।
[next]
তৃতীয় প্রজন্মঃ (১৯৬৪-১৯৭৫)
- তৃতিয় প্রজন্মে উদ্ভাবিত হয় ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (১৯৫৪)। যা ট্রানজিস্টর , রেজিস্টার এবং ক্যাপাসিটর এর সমন্বিত রূপ একটি ছোট্ট সিলিকন চিপ। "আই সি" নামে পরিচিত।
- দ্বিতীয় প্রজন্ম থেকে আরো বেশি শক্তিশালী। প্রতি সেকেন্ডে ১ মিলিয়ন নির্দেশনা এক্সিকিউট করতে সক্ষম।তৃতীয় প্রজন্মের উদ্ভাবিত ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটফটোঃ ইন্টারনেট
- বৈজ্ঞানিক এবং বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের উপযোগী একটি মাধ্যম।
- দ্বিতীয় প্রজন্মের তুলনায় বেশি নিরভরযোগ্য এবং বিকল হওয়ার প্রবণতা আরো অনেক কমে গেছে।
- বাণিজ্যিক উৎপাদন আরো সহজ এবং কম ব্যয় সাধ্য হয়ে গেছে।
- আগের থেকে আরো ছোট হয়েছে বিধায় কম জায়গা প্রয়োজন হয়।
- হাই-লেভেল ল্যংগুয়েজ দিয়ে আরো মানসম্মত প্রোগ্রামিং করা যাচ্ছে , যা ব্যবহার আরো সহজ করে তুলেছে।
- এই তৃতীয় প্রজন্মেই প্রথম মিনি কম্পিউটার উদ্ভাবিত হয়।
- দ্বিতীয় প্রজন্মের তুলনায় দ্রুত গতির এবং বেশি স্টোরেজ ধারণ ক্ষমতা।
- হস্তসাধিত যন্ত্রাংশ এসেম্বল করার প্রয়োজন হয় নি। মানুষের শ্রম এবং তুলনামুলক উৎপাদন খরচ কমে গেছে।
- টাইম-শেয়ারিং অপারেটিং সিস্টেম এর কারনে ইন্টারেক্টিভ ব্যবহার এবং একাধিক ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারছে।
- টাইম-শেয়ারিং অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারে অন-লাইন সিস্টেম ব্যবহারের ব্যবস্থা করে।
- খুব কম সময়ে, কম খরচে সফটওয়্যার ডেভেলপ করা হয়েছে তৃতীয় প্রজন্মে।
[next]
চতুর্থ প্রজন্মঃ (১৯৭৫-১৯৮৯)
- VLSI ( Very Large-Scale Integration) প্রযুক্তির মাধ্যমে ৩০,০০০ ইলেক্ট্রনিক চিপ দিয়ে একটি আলাদা চিপ তৈরী করা হয়। যেটি মাইক্রো-প্রসেসর ।চতুর্থ প্রজন্মের উদ্ভাবিত মাইক্রোপ্রসেসরফটোঃ ইন্টারনেট
- তৃতীয় প্রজন্মের মিনি কম্পিউটারের চেয়ে আরো ছোট আর স্বল্পমূল্যে যেত।
- কম্পিউটার রাখার জন্য আলাদা করে কোন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমের প্রয়োজন হতো না।
- কম বৈদ্যুতিক শক্তিতেই চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার ব্যবহার করা যেত।
- পার্সোনাল কম্পিউটারের সূচনা হয় এই প্রজন্মেই।
- দ্রুত গতির কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এবং একাধিক ডিভাইসে ডাটা শেয়ারিং করা উদ্ভাবন হয় ।
- দ্রুত গতির মেইন মেমোরি এবং সহায়ক মেমোরি উদ্ভাবিত হয়, যা আগের থেকে বেশি ডাটা সংরক্ষন করতে সক্ষম।
- প্রথম অপারেটিং সিস্টেম MS-DOS, Mac OS, MS-Windows - এর প্রচলন শুরু হয়।
- ব্যবহারকারীর সুবিধার জন্যে (GUI) Graphical User Interface প্রযুক্তির প্রচলন ঘটে। এতে আইকন, মেনু লিস্ট এর মাধ্যমে কাজ করার সুবিধা।
- Word Processing Package, Spreadsheet Package দিয়ে ডকুমেন্ট এবং ডাটা আনালাইসিস শুরু হয় চতুর্থ প্রজন্মে।
- সি" প্রোগ্রাম - হাই-লেভেল ল্যংগুয়েজ হওয়ার কারনে খুব দ্রুতই এর প্রচলন, ব্যবহার শুরু হয় এবং জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
- অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রচলন হয় চতুর্থ প্রজন্মেই, ফলে পিসি আরো শক্তিশালী হয়ে যায়।
- একাধিক ব্যবহারকারীর মাঝে ডিস্ক, প্রিন্টার শেয়ারিং-এর প্রচলন শুরু হয়।
- সুপার কম্পিউটারে একাধিক প্রসেসর ব্যবহার করার ফলে প্যারালাল প্রসেসিং করা যেত।
- হাই-লেভেল ল্যংগুয়েজ দিয়ে অ্যাপ্লিকেশন তৈরী করার কারনে একবার তৈরী করে সেটি একাধিক পিসি তে ব্যবহার করা যেত।
[next]
পঞ্চম প্রজন্মঃ (১৯৮৯ - বর্তমান)
- ULSI (Ultra Large-Scale Integration) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মেইন মেমোরি এবং হার্ড-ডিস্ক এর ধারন ক্ষমতা বেড়েছে। এবং সেই সাথে প্রায় ১০ মিলিয়ন ইলেক্ট্রনিক চিপ ব্যবহার করা হয়েছে মাইক্রপ্রসেসরে। মাল্টিকোর প্রসেসর চিপ এর প্রচলন শুরু হয়।
পঞ্চম প্রজন্মের উদ্ভাবিত নোটবুক পিসি - নোট বুক তৈরী এবং ব্যবহার বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
- অপটিক্যাল সিডি ডিস্ক উদ্ভাবন হয় এই পঞ্চম প্রজন্মেই।
- উচ্চ গতি সম্পূর্ণ বাস বা যোগাযোগ স্থাপনের নেটওয়ার্ক এর উন্নয়ন হয়।
- বহুল প্রচলিত ই-মেইল এর প্রচলন প্রথম হয় এই প্রজন্মেই।
- WWW (World Wide Web) এর প্রচলন হওয়াতে বিপুল পরিমান তথ্য উপাত্ত নিয়ে কাজ করার সুযোগ আসে ব্যবহারকারীদের।
- মাল্টিমিডিয়া ফিচার, যেমনঃ Text, Graphics, Audio, Video ব্যবহার আরো সহজ হয়ে গেছে দ্রুত গতি ও বেশি স্টোরেজ ধারন ক্ষমতার কারনে।
- RAID (Redundant Array of Inexpensive Disks) প্রযুক্তির জন্য হার্ড-ডিস্কে আগের চেয়ে বেশি স্টোরেজ এর পরিমান বেড়েছে।
- ডিজাইনারদের জন্য মাইক্রো-কার্নেল (MicroKernel) প্রযুক্তি উদ্ভাবন যাতে তারা চমকপ্রদ ডিজাইন করতে পারে।
- মাল্টি-থ্রেডিং (Multithreading) প্রযুক্তির উদ্ভাবনে অ্যাপ্লিকেশন এর গুনগতমান বৃদ্ধি পেয়েছে।
- ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েব-এ জাভা ব্যবহারের প্রচলন ঘটে।
- ইন্টারনেট বেজড বিভিন্ন ট্যুলস্ ব্যবহার আরো সহজ হয়ে ওঠে।
মন্তব্য