আপনার জন্য আরো লেখা
১. সুন্দর জীবনবৃত্তান্ত
ভাইবাতে নিজেকে উপস্থাপনার জন্য জীবনবৃত্তান্ত উপস্থাপন করার প্রয়োজন হয়। তাই জীবনবৃত্তান্ত তৈরির সময় আপনাকে অবশ্যই কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হতে পারে। চাকরিপ্রার্থীর যেটা সবচেয়ে ভালো অর্জন, তা জীবনবৃত্তান্তে আগে উল্লেখ করতে হবে। আর এতে যেন প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জীবনবৃত্তান্তের সঙ্গে একটি Forwarding Letter ও দিয়ে দিতে হবে। কোনো বানান বা ব্যাকরণগত ভুল যাতে না হয় সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে। জীবনবৃত্তান্তে অনেকই ভুল তথ্য উপস্থাপন করে থাকে এবং নিজেকে যোগ্য প্রমাণের জন্য সত্য নয় এমন অনেক তথ্য যোগ করে থাকে। এটি মোটেই করা উচিত নয়।
২. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে
ভাইভা বোর্ডে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র সঙ্গে নিতে হবে। চাকরির আবেদনের সময় এসব কাগজপত্র দিতে হয়, তাই এসব কাগজপত্র নিয়োগদাতাদের কাছে থাকলেও এসব সঙ্গে করে নিতে হবে। ভাইবা তে আপনার সামনে বসা সদস্যরা যেকোনো সময় এসব চেয়ে বসতে পারেন। এ ছাড়া সঙ্গে জীবনবৃত্তান্ত ও ছবিও রাখা উচিত। আর একটি কলমও সঙ্গে রাখা দরকার।
৩. ক্লান্তিভাব রাখবেন না নিজের মাঝে
সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় আপনার মধ্যে যেন কোনো প্রকার ক্লান্তিভাব না আসে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কেউ কেউ নির্দিষ্ট সময়ের ঠিক আগ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো করে ভাইভা বোর্ডে এসে উপস্থিত হবেন না। নির্দিষ্ট সময়ের অন্তত আধাঘণ্টা আগে ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত হয়ে নিজেকে প্রাণবন্ত করে তুলুন। প্রয়োজনে হাত-মুখ একবার ধুয়েও নিতে পারেন। অনেকে সারা রাত জেগে বা গভীর রাত পর্যন্ত পড়ালেখা করে সকালে ভাইভা দিতে আসা উচিত এতে চেহারায় কান্তির ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। নিজেকে সতেজ করে উপস্থাপনের জন্য ভাইভার আগের রাতের ভালো ঘুম খুব জরুরি। তাই বেশি রাত না জেগে ঘুমিয়ে পড়ে সকালে ভালোভাবে গোসল করে ভাইভা বোর্ডের উদ্দেশে রওনা হওয়া উচিত।
৪. পরিচ্ছন্নভাবে উপস্থাপন হতে হবে
নিজেকে পরিপাটিভাবে উপস্থাপন করার গুরুত্বও কিন্তু অনেক। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, শালীন ও মার্জিত পোশাক পরে ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত হতে হবে। পোশাকই কিন্তু আপনার ব্যক্তিত্বের পরিচয় দেবে।
৫. সালাম দিয়ে প্রবেশ করতে হবে
ভাইবা বোর্ডে প্রবেশের সময় সালাম দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। প্রবেশের পর অনুমতি না নিয়েই বসে উচিত নয়। অনেকে কথা বলার সময় হাত-পা নাড়ে। ভাইভা বোর্ডে কখনোই এ রকম করা জায়েয না। আর একটি বিষয় বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে, যখন যে ব্যক্তি আপনাকে প্রশ্ন করবেন, তাঁর দিকে তাকিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ভাইভা বোর্ডে যিনি প্রধান হিসেবে থাকেন, অনেকেই শুধু তাঁর দিকে তাকিয়ে উত্তর দিয়ে থাকেন। এটা মোটেই সঠিক নয়।
৬. আঞ্চলিকতা পরিহার করতে হবে
ভাইভা দেওয়ার সময় কথা বলার ক্ষেত্রে আঞ্চলিকতা যেন প্রকাশ না পায় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। কথা বলার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন আঞ্চলিক টান না এসে যায়। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলাও জরুরি। এ জন্য আগে থেকেই শুদ্ধ ভাষায় কথা বলার অভ্যাস করতে হবে। ইংরেজি বলার সময়ও উচ্চারণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
৭. প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে
ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত হওয়ার আগে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে যথাসম্ভব জেনে নিতে হবে। যদি সম্ভব হয়, ভাইভা বোর্ডে কারা কারা থাকবেন, সে সম্পর্কেও জেনে নেওয়া ভালো। ভাইভার আগে হন্তদন্তভাবে হাজির না হয়ে হাতে সময় রেখেই যথাস্থানে উপস্থিত হতে হবে।
৮. ধূমপান করে ভাইবায় প্রবেশ করা উচিত নয়
ভাইবা বোর্ডে প্রবেশের আগে কোনোক্রমেই ধূমপান একদমই করা উচিত না। ভাইভার আগে ধূমপান পরিহার করাটাই হবে বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। আপনি যদি ধূমপান করে আসেন আর ধূমপানের কারণে আপনার মুখ থেকে যদি সিগারেটের গন্ধ বেরোতে থাকে, তবে ভাইবা বোর্ডে যাঁরা থাকবেন তাঁরা বিষয়টি সহজভাবে নেবেন না।
৯. সংক্ষেপে ও হাসিমুখে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে
ভাইবা বোর্ডে যে বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, শুধু সে বিষয়েই উত্তর দিতে হবে। বেশি কথা বলা বা অপ্রাসঙ্গিক কোনো বিষয়কে টেনে আনা ঠিক হবে না। আবার গোমড়ামুখে বসে থাকলেও কিন্তু তা অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। ভাইবা বোর্ডের সদস্যরা বেশি কথা বলা যেমন পছন্দ করেন না আবার গোমড়ামুখের মানুষকেও পছন্দ করবেন না। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় হাসিমুখে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন। তবে অকারণেও কিন্তু আবার হাসা উচিত নয়। আর একটি বিষয়, সব প্রশ্নেরই যে উত্তর জানা থাকবে তা কিন্তু নয়। না পারলে বিনীতভাবে বলতে হবে- সরি স্যার, পারছি না।
১০। অপ্রীতিকর বা অবমাননাকর কথা
আবেগ তাড়িত হয়ে কোন প্রশ্নের উত্তর দেয়া যাবে না। উত্তর দেয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন ব্যক্তি, সমষ্টি, জাতি, ধর্ম বা রাষ্ট্র সম্পর্কে কোন প্রকার অবমাননাকর বা অপ্রীতিকর কথা বেয়িয়ে না যায়। এগুলো এড়িয়ে যেতে হবে।
১১. বিনীতভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে
নিজেকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করুন। আত্নবিশ্বাসের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করুন। মুদ্রাদোষ গুলো সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন থাকুন। গোঁফে হাত বুলানো, চুল ঠিক করা, নাক চুলকানো, টাই ঠিক করা, গলা দিয়ে শব্দ করা বা জামা কাপড় ঠিক করবেন না। নিজে নিজে হ্যান্ডশেক করার জন্য আগে হাত বাড়াবেন না। নিয়োগকর্তাগন যদি করমর্দনের জন্য হাত বাড়ান তাহলে মোলায়েম ভাবে করর্মদন করুন।
১২. মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া উচিত নয়
মিথ্যা কথা বললে নিজেই বিপদে পড়বেন। মিথ্যা কথা বলে ভাইবা বোর্ডে নিজেকে জাহির করা একদমই উচিত নয়।
সচারচর যে প্রশ্ন গুলি ভাইবাতে জিজ্ঞাসা করে থাকেঃ
১. আপনার নাম কি?-
২. আপনার নামের অর্থ কী?-
৩. এই নামের একজন বিখ্যাতব্যক্তির নাম বলুন?-
৪. আপনার জেলার নাম কী?-
৫. আপনার জেলাটি বিখ্যাত কেন?-
৬. আপনার জেলার মুক্তিযোদ্ধার নাম বলুন যে কিনা ভালোই পরিচিত?-
৭. আপনার জেলার একজন বিখ্যাত ব্যক্তির নাম বলুন?-
৮. আপনার বয়স কত?-
৯. আজ কত তারিখ?-
১০. আজ বাংলা কত তারিখ?-
১১. আজ হিজরি তারিখ কত?-
১২. আপনি কি কোনো দৈনিক পত্রিকা পড়েন?-
১৩. পত্রিকাটির সম্পাদকের নাম কি?-
১৪. আপনার নিজের সম্পর্কে ইংরেজিতে বলুন?
মন্তব্য